আইডি কার্ড সংশোধনে আসছে পরিবর্তন

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা গ্রহণে বড় ধরনের পরিবর্তনের খবর এসেছে, যা নাগরিকদের জন্য অনেক স্বস্তি বয়ে আনবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এনআইডি সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ এবং জনবান্ধব করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এখন থেকে এনআইডি হারিয়ে গেলে নতুন কার্ড পাওয়ার জন্য থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। এর ফলে মানুষের হয়রানি ও সময় অপচয়ের পরিমাণ অনেক কমবে। এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর হলে, এনআইডি সেবা গ্রহণে আরও গতিশীলতা আসবে এবং সাধারণ জনগণ সহজেই এই সেবা উপভোগ করতে পারবেন।

আইডি কার্ড সংশোধনে আসছে পরিবর্তন

এছাড়া, নতুন ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধির সই সংগ্রহ করার নিয়মটিও বাতিল করার প্রস্তাব এসেছে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ, কারণ ভোটার নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় অনেকেই জনপ্রতিনিধির সই পেতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও দুর্নীতির মুখোমুখি হন। এই বাধ্যবাধকতা উঠে গেলে সাধারণ জনগণ আরও সহজে ভোটার নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন এবং হয়রানি এড়াতে পারবেন।

ইসি কর্মকর্তারা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন, যেখানে এনআইডি সেবা প্রাপ্তিতে দালালের মাধ্যমে হয়রানি বন্ধ করতে একটি নতুন অ্যাপ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই অ্যাপটি বিকাশ বা অন্যান্য মোবাইল অ্যাপের মতো কাজ করবে, যেখানে নিজের ছবি ও অন্যান্য তথ্য ভেরিফিকেশন করা যাবে। এতে দালালদের মধ্যস্থতা ছাড়াই জনগণ সরাসরি সেবা নিতে পারবে, যা সময় ও খরচ উভয়ই কমাবে।

এনআইডি হারিয়ে গেলে পুনঃমুদ্রণের জন্য এখন আর জিডি করার প্রয়োজন হবে না। এটি একটি বড় সুবিধা হিসেবে আসছে, কারণ অনেকেই জিডি করতে গিয়ে সময় এবং ভোগান্তির শিকার হন। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, সেবাগ্রহীতারা সহজেই তাদের হারানো এনআইডি পুনরায় সংগ্রহ করতে পারবেন।

তবে, এনআইডি সেবা সম্পর্কিত তথ্য সঠিকভাবে জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে না বলে একটি বড় সমস্যা রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন যে, এনআইডি সেবা এবং নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য কার্যক্রমের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন। জনগণের মাঝে সঠিক তথ্য না পৌঁছানোয় অনেকেই দালালদের সহায়তা নিতে বাধ্য হন। সেবা সহজ করার পাশাপাশি সঠিক প্রচার চালানো হলে জনগণ স্বচ্ছ ও হয়রানিমুক্তভাবে এনআইডি সেবা গ্রহণ করতে পারবে।

একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা হলো, ডাটা এন্ট্রির জন্য প্রয়োজনীয় অপারেটর না থাকলে, সেবাগ্রহীতারা সেবা থেকে বঞ্চিত হন। কর্মকর্তারা একটি বিকল্প ডাটা এন্ট্রি অ্যাকাউন্ট চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে সেবা ব্যাহত না হয়। এ ধরনের পদক্ষেপগুলো যদি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এনআইডি সেবা আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং জনবান্ধব হবে।

এছাড়া অনলাইনে এনআইডি সেবা প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটিও আরও সহজ ও স্বয়ংক্রিয় করার প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে আবেদন ফরম জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যাটাগরিভুক্ত হয়ে যাবে এমন একটি প্রক্রিয়া চালু করা গেলে, এনআইডি সেবা গ্রহণ আরও দ্রুত এবং সহজ হয়ে উঠবে।

সব মিলিয়ে, এই নতুন উদ্যোগগুলো যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এনআইডি সেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি আসবে এবং সাধারণ জনগণ ঝামেলামুক্তভাবে এনআইডি সেবা নিতে সক্ষম হবে।

Previous Post Next Post