অনেকেই বলে গুগল এডসেন্স পাওয়া অনেক সহজ। হ্যাঁ। আসলেই এটা পাওয়া অনেক সহজ তবে অনেকের কাছে এটা অনেক জটিল মনে হয়। আসলে জটিল বলতে এর যে সকল নিয়মকানুন রয়েছে এগুলো অনুসরণ না করলেই অনেকের কাছে জটিল মনে হয়। আজকে আমি বলতে চাই কি কি বিষয়গুলি ফলো করলে খুব সহজেই গুগল এডসেন্স পাওয়া যাবে। প্রথমে আমাদেরকে যে বিষয়টি ফলো করতে হবে সেটি হল প্রোপারলি ওয়েবসাইটকে রেডি করা। অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটের অনেকগুলি খুঁটিনাটি বিষয় আছে সে সম্পর্কে ভালোভাবে আমাদেরকে জানতে হবে। তার মধ্যে হলো:
আর্টিকেল: আমরা অনেকেই ছোট পরিসরে আর্টিকেল লিখে থাকি। গুগলের পরিভাষায় এগুলো ইনসাপেশিয়ান কনটেন্ট। অর্থাৎ ছোট কনটেন্ট। এ সকল ছোট কন্টেন কখনোই গুগল পছন্দ করে থাকে না এবং এ ধরনের সাইটগুলোতে এডসেন্স দেয় না বললেই চলে। তাই অবশ্যই আমাদের কেউ উচিত বড় পরিসরে যে কোন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লেখা। আর্টিকেলের মধ্যে ফন্টের সাইজ সঠিক রাখা। এছাড়া ফান্ডের কালার সাইটের সঙ্গে সামঞ্জস রেখে আর্টিকেল তৈরি করা। টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন সুন্দরভাবে তৈরি করা। আর্টিকেল এর মধ্যে অবশ্যই ইমেজ ব্যবহার করা। সেই সাথে ইমেজের ডেসক্রিপশন দেওয়া। অবশ্যই লেবেল দিতে হবে।
গুগল সার্চ ইঞ্জিন: গুগল সার্চ ইঞ্জিন অ্যাকাউন্টে অবশ্যই সংযুক্ত থাকতে হবে। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইট থেকে যুক্ত করে নিতে হবে। এছাড়াও গুগল অ্যানালাইটিক ব্যবহার করতে হবে। গুগল সার্চিং থেকে এনালাইটি কোড অবশ্যই ব্লগের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিতে হবে। অবশ্যই কাস্টম রোবট এক্স ব্যবহার করতে হবে। গুগলের নিয়ম অনুসারে কাস্টম রোপাটিক্স ব্যবহার না করলে আপনি কিন্তু google এডসেন্স যতবারই এপ্লাই করুন না কেন আপনি অবশ্যই একাউন্ট পাবেন না এটা নিশ্চিত থাকতে পারেন। তাই আমাদেরকে উচিত অবশ্যই google এনালাইটিস কোড এবং কাস্টম রোবোটিক্স ব্যবহার করা। অনেকেই জানে না কাস্টম রোবোটিক্স কিভাবে ইনাবল করতে হয়। একেক ওয়েবসাইটের রোবট এক্স আসলে এক এক রকম হয়ে থাকে তাই এ বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নিন।
থিম: গুগল এডসেন্স পেতে গেলে অবশ্যই সুন্দর থিম যুক্ত করে নিতে হবে। এডসেন্স রেডি থিম ব্যতীত সহজে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রভ হয় না। যে কোন থিম সিলেক্ট করার পূর্বে অবশ্যই নিয়ে বিশ্লেষণ বার আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। যে ওয়েবসাইটে নেভিগেশন থাকে না সে সকল ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স কখনো আপলোড করবে না এটা নিশ্চিত। নেভিগেশন বারের মধ্যে আপনি কয়েকটি জিনিস অবশ্যই রাখবেন তা হল:
- হোম
- এবাউট
- কন্টাক্ট
- প্রাইভেস পলিসি
- ট্রান্স কন্ডিশন
- এ ছাড়া আপনার প্রয়োজনীয় মেনু অবশ্যই রাখতে হবে
যেখানে গুগল এডসেন্সের অ্যাপস করবে সেখানে অ্যাড মানানসই কিনা সেটা গুগল অবশ্যই যাচাই বাছাই করে এডসেন্স এপ্রুভ করে। অতএব আমাদের খেয়াল রাখা উচিত যে স্থানে অ্যাড আমরা লাগাবো সেই স্থানটি সকলের সমস্যার সম্মুখীন না হয় অথবা একটি প্রাণ উজ্জ্বল দেখতে দেখায় এমন স্থানে এড প্লেসমেন্ট রাখতে হবে। থিমের কালার যেমন তেমন রাখা যাবে না। অবশ্যই থিমের কালার ওয়েবসাইটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে ওয়েবসাইটে যেসকল আর্টিকেল লেখা হবে এর ফন্ট সাইজ সঠিক মাত্রায় রাখতে হবে। অবশ্যই আর্টিকেল যেগুলি লিখবেন সেগুলি যেন একসঙ্গে লেগে না থাকে অর্থাৎ ফাঁকা রাখতে হবে।
ট্রাফিক: ওয়েবসাইট বানালেন কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক নেই। তাহলে কিন্তু গুগল এডসেন্স পাওয়া যায় না। অনেকে ট্রাফিক আনার জন্য ই লিগ্যাল পন্থা ব্যবহার করে থাকে। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের ভিপিএন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ায়। যারা এলিগের অধ্যায় ওয়েবসাইটের ট্রাফিক এনে থাকে তাদের ওয়েবসাইট কখনো এডসেন্সের জন্য উপযুক্ত হয় না। ট্রাফিক আনার জন্য আপনাকে অবশ্যই গুগল সার্চ ইঞ্জিনের পন্থা অবলম্বন করতে হবে। গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে কিভাবে ভালোভাবে ট্রাফিক আনা যায় সে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটে আসলেই হবে না। কারণ ওয়েবসাইটের ট্রাফিক কত সময় পর পর করে আসতেছে এই বিষয়টি গুগল নজরদারি করে থাকে। সঠিক পন্থায় ট্রাফিক আনার জন্য আপনাকে অবশ্যই এসইওর পথে চলতে হবে।
আর্টিকেল: মূলত একটি ওয়েবসাইটের আর্টিকেল এর উপর ডিপেন্ড করে গুগল এডসেন্স পাবে কিনা। আপনার ওয়েবসাইটে যত পরিমাণ কনটেন্ট থাকবে GOOGLE এডসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনা ততই বেশি। উপরে আমি বলে এসেছি আরটিকেল ছোট করা যাবে না। একটি ওয়েবসাইটে অবশ্যই নূন্যতম ৫০০ ওয়ার্ড এর উপরে আর্টিকেল লিখতে হবে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে বলব এক হাজার ওয়ার্ডে আর্টিকেল লেখা। আর্টিকেল গুলি পরিচ্ছন্ন এবং গোছালো হয় সে বিষয়ে অবশ্যই নজরদারি করতে হবে। গ্রামার যেন সঠিক থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। যে সকল আর্টিকেল লিখবেন তা যেন উচ্চমানের কিওয়ার্ড হয়ে থাকে। অর্থাৎ হাই ভলিউম এবং লো ভলিউম কিওয়ার্ড হয়ে থাকে। গুগলে প্রথম এপ্লাই করার পর থেকেই গুগল কিন্তু আপনাকে ট্রাকিং করা শুরু করে। সে সময় আপনার ওয়েবসাইট যাচাই-বাছাইকরার জন্য কিন্তু তিন থেকে সাত দিন বা তারও বেশি সময় নিয়ে থাকে। এ সময়ের মধ্যে সে লক্ষ্য করে আপনি কতদিন পরপর ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পোস্ট করতেছেন। অর্থাৎ রেগুলার পোস্ট করেন নাকি আন রেগুলার পোস্ট করেন সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখে। মনে রাখবেন গুগল কিন্তু রেগুলার পোস্ট করাকে পছন্দ করে থাকে।
আবেদনের সময় করণীয়: আবেদনের সময় অবশ্যই আপনার অনেকগুলি বিষয়ে লক্ষ্য করতে হবে। সে সকল বিষয়গুলি নিচে দেওয়া হল:
- অবশ্যই GOOGLE একাউন্টে সাইন আপ করে নিতে হবে
- সাইন আপের পরে আপনাকে ওয়েবসাইট দিতে হবে অর্থাৎ যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি গুগল এডসেন্স পেতে চান।
- কান্ট্রি সিলেক্ট করে নিতে হবে এবং আপনার একাউন্টে বিজনেস নাকি ইন্ডিভিজুয়াল সে সকল তথ্য দিতে হবে এবং তাদের ড্রামস কন্ডিশন পড়তে হবে বা জানতে হবে।
- অবশ্যই GOOGLE এড থেকে এড সংগ্রহ করে আপনার ওয়েবসাইটের হেড কোডের ভিতরে দিতে হবে।
- আপনার পার্সোনাল তথ্য দিতে হবে। মনে রাখবেন পার্সোনাল তথ্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অহেতুক কোন তথ্য দেওয়া যাবে না কারণ গুগল এটিকে ভেরিফাই করে থাকে।
- গুগল এড থেকে পাবলিক কোড বের করে নিয়ে ব্লগে গিয়ে মনিটাইজেশন সংযুক্ত করে দিতে হবে।
- সবকিছু ঠিকঠাক করার পর তাদের কাছে রিকুয়েস্ট পাঠাবেন।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার অ্যাকাউন্টটি তাদের পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে চলে যাবে। তারা আপনার ওয়েবসাইটকে যাচাই-বাছাই করার জন্য দীর্ঘ একটি সময় নিতে পারে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর অবশ্যই আপনার মেইলে তারা কনফার্মেশন মেসেজ পাঠাবে।আপনি যদি ওপরে সব তথ্য গুলি মেনে চলে থাকেন তাহলে অবশ্যই কংগ্রেচুলেশন মেসেজ পেয়ে যাবেন। সবশেষে একটি কথা বলব উপরে যে সকল তথ্য গুলো বললাম এগুলো সব গুলি গুগলের ট্রান্স কন্ডিশন থেকে পাওয়া। অতএব কোনোটিকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। উপরের সব তথ্য গুলি ১০০% করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমি গ্যারান্টি দেবো আপনি গুগল এডসেন্স পেয়ে যাবেন। মনে রাখবেন উপরের কোন তথ্য একটি মিসটেক হলে আপনি গুগল পাওয়ার উপযুক্ত হবেন না। তাই গুগল এডসেন্স পাওয়ার জন্য আমাদের উচিত একটি সাইটকে স্বয়ংসম্পূর্ণ বানানো এবং রেগুলার অ্যাক্টিভিটি দেখানো। এছাড়াও আপনি চাইলে গুগলের ফোরাম পড়ে নিতে পারেন।