আসলে কি বেশি মেগাপিক্সেল মানেই ভালো ছবি?

একজন ব্যক্তি দোকানে গেল একটি মোবাইল ফোন কিনতে বিক্রেতার কাছে একটি প্রশ্ন অবধারিত ভাবেই থাকবে তা হল মোবাইলের ক্যামেরা কত মেগাপিক্সেল।  আসলে অনেকে চাই কম দামের মধ্যে ভালো ধরনের ছবি কিভাবে উঠানো যায়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা মেগাপিক্সেল বেশি হইলে যে ছবি ভালবাসবে এটার কোনো ভিত্তি নেই। এই কিছুদিন আগেও যেখানে ডিএসএলআর এগিয়ে ছিল তার অনেকাংশে কমে বর্তমানে সবাই স্মার্টফোন ক্যামেরার দিকে ঝুঁকেছে বেশি। স্মার্টফোন বহন করার সহজ। তাছাড়া এর ক্যামেরা ও উন্নত হচ্ছে। টেলিস্কোপ এবং পেরিস্কোপ লেন্স সহ উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্টফোনের ক্যামেরা রয়েছে। বাজারের বর্তমান বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির 64 এবং 108 মেগাপিক্সেল ক্যামেরাযুক্ত স্মার্টফোন ভরপুর। কিন্তু এই মেগাপিক্সেল এর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে  অ্যাপেল তাদের আইফোন s6 মাত্র 12 মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এমনকি গুগোল পিক্সেল ফোনেও 12 মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এছাড়াও আইফোন 15  তে রয়েছে 12 মেগাপিক্সেল এর ক্যামেরা। এর পেছনের কারণ কি হতে পারে?

বেশ কিছু কারণ রয়েছে এর পেছনে। প্রথমেই বলে রাখি, বেশি মেগাপিক্সেল মানিয়েছে খুব ভালো ছবি হবে তা কিন্তু না। ক্যামেরা সেনসর সাইজ যত ছোট তার মেগাপিক্সেল যদি বেশি রাখা হয় এতে ছবি খারাপ আসে। তবে ক্যামেরা সেনসর যত বড় হবে, ততো বেশি আলো প্রবেশ করবে।ফলাফলের ছবিও ভালো আসবে। মেগাপিক্সেলের এক্ষেত্রে কোন মুখ্য বিষয় না। এদিকে উন্নতির  ক্যামেরার জন্য মেগাপিক্সেল ছাড়াও আরও কিছু বিষয় রয়েছে। অ্যাপেল 2015 সালে বাজারে আসা আইফোন 6s এবং বর্তমানে আইফোন 15 রয়েছে 12 মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। কিন্তু ছবির পার্থক্য এসেছে বিশাল উন্নতি অকল্পনীয়। এসব সম্ভব হয়েছে হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার এর কারণে। স্মার্টফোনে তোলা ছবি কেমন হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে ইমেজ প্রসেসিং সফটওয়্যার এর উপর। এছাড়া ছবির যত বেশি মেগাপিক্সেল হোক না কেন আমরা আসলে তা হুবহু দেখার সুযোগ পাইনা। সহজ করে যদি বলতে যাই, আমাদের বাসায় যদি আল্ট্রা এইচডি ডিসপ্লে মনিটর থাকে আমরা সেটি দিয়ে খালি চোখে সর্বোচ্চ 8.3 মেগাপিক্সেল পরিমাণের ছবি বা ভিডিও দেখার সুযোগ পাবো। অর্থাৎ 12 মেগাপিক্সেল এর ছবি আমাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বাজারে প্রচলিত স্মার্টফোন মনিটর কিংবা টিভির ডিসপ্লে তে ছবি দেখার জন্য 12 মেগাপিক্সেল ক্যামেরাই যথেষ্ট।

আসলে কি বেশি মেগাপিক্সেল মানেই ভালো ছবি

ভালো মানের ক্যামেরার আরেকটি কারণ হলো জায়গা বেশি লাগে এবং মেগাপিক্সেল এর ছবির সাইজ হয়ে থাকে তা অনেক বেশি। এতে করে অল্প ছবি তুললে ফোনের মেমোরি ফুল হয়ে যাওয়ার সংখ্যা থাকে। আর তাছাড়া এখনো  অ্যাপেলে মেমোরি কার্ড যুক্ত করার কোন সুবিধাই নেই। এছাড়াও যদি আসি ভালো মানের ক্যামেরার প্রস্তুতি নেয়ার ব্যাপারে, বেশি মেগাপিক্সেল এর ছবি ক্যাপচার করতে অনেক বেশি সময় লাগে। এতে ফোনের র‌্যাম-রোম উপর চাপ পড়ে। ফলে খুব স্লো হয়ে যায় ছবি।এক্ষেত্রে ফোন হ্যাং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে এবং ব্যাটারি দ্রুত চার্জ চলে যাবে। এছাড়া আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। আইফোনের ক্যামেরা 12 মেগাপিক্সেল হলেও ভালো সেন্সর  দেওয়া থাকে। ফলে ভালো চমৎকার ইমেজ এবং ইমেজ প্রসেসিং সফটওয়্যার এর কারণে সর্বোচ্চ মানের পিকচার তুলতে সক্ষম। বাজারে থাকা অন্য বেশি মেগাপিক্সেল ক্যামেরা চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে ভালো ছবি আসে।

এদিকে সামনে আইফোন যখন আরও শক্তিশালী প্রসেসর উন্নত ডিসপ্লে ও বেশি স্টোরেজ থাকবে তখন 12 মেগাপিক্সেল এর বেশি ক্যামেরার প্রয়োজন হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছে আইফোন তাদের নতুন ভার্সন গুলিতে 48 মেগাপিক্সেল ক্যামেরা লাগাতে পারে। পূর্বের সকলঐতিহ্য ভেঙে সামনে আইফোন 15 একটি মডেলের 48 মেগাপিক্সেল ক্যামেরা রাখতে পারে। এ সংবাদে উৎসুক জনতা বেশ উত্তেজিত। বর্তমানে 12 মেগাপিক্সেল যেখানে ভালো ছবি দিচ্ছে সেখানে 48 মেগাপিক্সেল এর ছবি কেমন হতে পারে একটু ভাবুন তো? আর শোনা যাচ্ছে সামনের মাসেই তাদের এই ক্যামেরা লঞ্চ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post