বি-টু-বিজনেস সম্পর্কে জানার আগে আমার লিখাটি পড়ার অনুরোধ রইল।

আজকে আমার এই উপদেশটি আপনি বিজনেস গাইডলাইন হিসাবে নিতে পারেন। কেন যদি সুন্দর না হয় তাহলে যতই মধুনা দিতে থাকুন না কেনসে যেমন ছিল তেমনি থাকবে। তাই এখানে বিজনেস সম্পর্কে এমন কিছু আইডিয়া আপনাকে দেওয়া হবে যেগুলো আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরুর পূর্বে অবশ্যই জানা প্রয়োজন। আপনার হাতে যদি সময় না থাকে এবং মূল বিষয়বস্তু দৃষ্টিপাত করতে চান তাহলে বোল্ড করা থেকে পড়তে শুরু করতে পারেন। আপনার ব্যবসাটি অনলাইন হোক অথবা অফলাইন হোক, একটি সঠিক প্ল্যান ছাড়া যেকোনো ব্যবসার সফলতা আশা করা একদম অভিপ্রায় মাত্র আর রূপ কথার হরিণ পাওয়া প্রায় একই কথা। বর্তমান মধ্য যুগে সব কিছু প্রযুক্তি নিয়ে খেলা করছে ফলে আমাদের জীবন ব্যবস্থা শুরু করে প্রায় সকল জিনিষের প্রতিফলন প্রযুক্তির মধ্যেই দেখা যায়। ভুল সীদ্ধান্ত বা লক্ষ্য যদি ঠিক না থাকে তাহলে একজন ব্যক্তি নাবিক যেমন সীমাহিন সাগরে ডুবে যেতে পারে ঠিক একইভাবে বা ব্যবসায়িক (পণ্য সেবা) ক্ষেত্রেও এমনটি অস্বাভাবিক নয়। তাই ব্যবসা শুরুর পূর্বে অবশ্যই আপনাকে সঠিক হালনাগাদ করতে হবে আপনি ব্যবসার জন্য উপযুক্ত কিনা।

বি-টু-বিজনেস সম্পর্কে জানার আগে আমার লিখাটি পড়ার অনুরোধ রইল।

আপনার ব্যবসা শুরু করার পূর্বেই জ্ঞানহীন থাকলে শেষ হতে পারে। তাই প্রয়োজন একটি সঠিক পরিকল্পনা বা ব্যবস্থা যা আপনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। ডিজিটিং মার্কেটিং এর চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে ব্যবসার সঙ্গে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত আছে। আপনার ব্যবসাকে সঠিক পর্যায়ে দাঁড় করানোর জন্য অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্ল্যাটফর্ম আপনাকে জানা প্রয়োজন। একটি ব্যবসার প্রথম পর্যায়ে কি করা উচিত এবং এবং কোন কাজ গুলি করলে আপনার সমস্যা বাড়তে পারে সে সকল বিষয়গুলি নিয়ে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয়েছে। যাকে ইংরেজিতে ঠিক বিন্দুতে বলা হয়। অর্থাৎ বিন্দু শুরু থেকেই আমাদেরকে কার্যক্রম শুরু করতে হবে।  ব্যবসা শুরুতে আপনাকে একটি গল্প বলবো। গল্পটি অবশ্যই আপনার কাজে লাগবে।

ব্যবসা শুরুর গল্প

এক কাঠমিস্ত্রি ছোট্ট একটি দোকান করে বসে আছে। অনেকদিন যাবত সে কাজ পাচ্ছে না। কাজ না পেয়ে এক ধরনের হতাশায় ভুগছে সে। পাশদিয়ে সেলিম ভাই হেঁটে গেলেন এবং তার হতাশা মুখ দেখলেন। তারা হতাশা মুখ দেখে সামনে এগিয়ে এসে তাকে প্রশ্ন করলেন। কী সেলিম ভাই পেঁচা মুখের মত মুখ করে বসে আছেন কেন। সেলিম ভাই মাথায় হাত দিয়ে বলল ভাই আজ কয়েকদিন যাবত আমি না খেয়ে বসে আছি। সেইসাথে বাড়ির ছেলে-মেয়ে সবাই না খেয়ে আছে। ব্যবসাটাকে ভালোভাবে গুটিয়ে নিতে পারছি না কি যে করি? সেলিম ভাই ছিল একজন ডিজিটাল মার্কেটিং। তিনি কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন আরে বোকা তুমি তো একটুও অন্য পথে হাঁটছে যার জন্য বেকার বসে আছো। এখন অনলাইনের যুগ, এই অনলাইন যুগে তোমাকে কাজ খুঁজে নিতে হবে। তোমাকে সহজ কিছু উপায় বলে দেই দেখবে তুমি অনেক কাজ পেয়ে যাচ্ছ। প্রথমে তুমি অনলাইন থেকে লিস্ট করে নাও তোমাদের এলাকায় কতগুলি স্কুল আছে। আর স্কুলের লিস্ট তুমি গুগলম্যাপে পাবে। তারপর তুমি স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করো।তাদের স্কুলের চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্র যেগুলি রয়েছে সবগুলোই আমি সুন্দর ভাবে ঠিকঠাক করে দেব। কালজানি এসে দেখি তুমি সকল স্কুলের লিস্ট তৈরি করে ফেলেছ। পরেরদিন কাঠমিস্ত্রি স্কুলের লিস্ট করে ফেলল। তার পরামর্শ অনুযায়ী সকল স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের স্কুলের চেয়ার টেবিল এবং আসবাসপত্র ঠিক করে দেওয়ার জন্য বলল। সকল শিক্ষক তার সঙ্গে কাজ করার জন্য সমর্থন জানালো। নিমিষেই সে প্রায় পঁয়ত্রিশটি স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং তাদের সকলের কাজ নিয়েছে। তারপর এখন তার এমন অবস্থা হয়েছে সে একা কাজ করতে পারে না বরঞ্চ 7 থেকে 8 জন লোক তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।এবার আপনি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ফলো করুন।

গুগল ম্যাপ:

মিস্ত্রি কিভাবে কাজ পেল? এ প্রশ্নের উত্তর গুগল ম্যাপের মাধ্যমে সকল স্কুলের লিস্ট করে নিল এবং সে তার ব্যবসাকে পরিপূর্ণ করে তুলল। একটা বিষয় মনে রাখবেন গুগল ম্যাপে কিন্তু সব ধরনের বিজনেস এর তথ্য পাওয়া যায়।  আপনি কি ধরনের বিজনেস চান সকল বিজনেসের ইনফর্মেশন কিন্তু গুগল ম্যাপে পাওয়া যায়। গুগল ম্যাপ এমন একটি সাইট যেখানে ইলেকট্রিশিয়ানের সকল তথ্য, স্কুলের তথ্য, যেকোনো মোবাইল এসোসরিজব্যবসার তথ্য,  আরো নানা ধরনের তথ্য সেখানে কিন্তু পাবেন। এই তথ্যগুলো দিয়ে আপনার কি কাজ? এবার আসুন জেনে নেই গুগল ম্যাপ আপনাকে বিজনেস কিভাবে সহযোগিতা করতে পারে।

মনে করুন আপনি একজন ইলেকট্রিশিয়ান সার্ভিস প্রোভাইড করেন। অথবা মনে করুন আপনি তার বিক্রি করেন। যেগুলো আমরা কারেন্টের সঙ্গে ব্যবহার করি সেই তারের কথা বলছি। এইতার বিক্রি করবেন আপনি কোথায়? ধরুন অজানা এক স্থানে আপনাকে ছেড়ে দেওয়া হল। ইলেকট্রিশিয়ান দোকান গুলি রয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করার জন্য। তখন আপনি কি করবেন?  এক্ষেত্রে আপনাকে কিন্তু সকলের কাছে জিজ্ঞাসা করতে হবে অথবা সবাই সঠিক তথ্য আপনাকে নাও দিতে পারে। ধরে নেন ওই এলাকায় 15 টি দোকান আছে। আপনি যদি সকলের কাছ থেকে তথ্য নেন তাহলে কিন্তু দেখা যাবে পাঁচ থেকে সাতটি দোকান পেয়ে যাবেন। আর যদি আপনি গুগল ম্যাপের মাধ্যমে সাহায্য নেন তাহলে কিন্তু অধিক পরিমাণে দোকান পাওয়া সম্ভব। এখন আপনার কাছে প্রশ্ন আসতে পারে নতুন যারা দোকান দেয় তাদেরকে তো খুঁজে পাওয়া যাবে না গুগল ম্যাপে। হ্যাঁ এটা সঠিক উত্তর কিন্তু তারা ভুল করে থাকে। একটি বিজনেস শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গুগল ম্যাপ এর সঙ্গে কানেক্ট থাকা উচিত। তাহলে তার ব্যবসাটি এক ধরনের পাবলিসিটি বাড়াবে অনলাইনের মাধ্যমে।

একটি ভাল এবং কার্যকর মার্কেটিং মেসেজ সর্বক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু থাকে।

  • ১। আপনার ব্যবসাটি কেন ভালো এবং অন্যদের তুলনায় কি কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে এ বিষয়গুলি জনসমক্ষে তুলে ধরুন। অন্যদের থেকে আপনি কেন ভালো সার্ভিস প্রোভাইড করবেন সে বিষয়গুলি সকলকে জানানোর চেষ্টা করুন এবং সকলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন যাতে আপনার একবার ব্যবহারে আকৃষ্ট হয়েছে পরের বার অবশ্যই আপনার সার্ভিস ব্যবহার করতে আসে।
  • ২। অনেক মক্কেল আছে তারা জানতে চায় কেন আপনার পণ্য গ্রহণ করব সেখানে তোএরকম দোকান আরো আছে কিন্তু কেন আপনার সার্ভিসটা এসে নিবে। আপনাকে একটি অন্যরকম একটি উত্তর দিতে হবে যার দ্বারা গ্রাহকের কাছে আপনার প্রতি আস্থার যায়গা তৈরি হয়। সে যেন আপনার সঙ্গে ব্যবসা করতে সম্মতি জানায়। দেখুন মানুষ পটানো খুব সহজ কিন্তু মানুষের মন জয় করা অনেকটাই কঠিন। এখানে আমার পরামর্শ থাকবে উল্টাপাল্টা সেবার  কথা বক্তব্য না দিয়ে সঠিক পয়েন্টগুলি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন এবং নিজেকে নিজের অবস্থানে নিয়ে চিন্তা করুন আপনি কেন চান!
  • ৩। অনিবার্য কাজের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যবসা যেহেতু একে অপরের সঙ্গে করতে হয় সেহেতু আপনাকে লোক চিনতে হবে। সে কোন ক্যাটাগরির লোক। আপনার সঙ্গে তাঁর ব্যবসা যায় কিনা এ বিষয়ে মনস্থির করে নিন। সঠিক সময়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন আপনার ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে ব্যবসা ডুবিয়ে দেওয়ার কারণ। বর্তমান সময়ে ধান্দাবাজ লোকের অভাব নেই। আপনার ব্যবসাকে উপর থেকে নিচে নামানোর জন্য যা যা করণীয় কিছু মানুষ মানুষ সেটুকুই করতে পারে।  অতএব সাবধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
  • ৪।  ব্যবসায়ের কৌশলের মধ্যে অবশ্যই দূরদর্শিতা প্রমাণ করতে হবে। আপনার মধ্যে ব্যবসার মনোভাব গড়ে তুলুন। সেই সাথে ধৈর্যশীল হন। দক্ষতার পরিচয় দিন। যে কোন পণ্যের সেবাগত  ও গুণগত মান বজায় রাখার চেষ্টা করুন। অবশ্যই আপনি পণ্য  যথাযথ মূল্য নির্ধারণ করবেন। মনে রাখবেন অতিরিক্ত লাভের আশায় পণ্যের দাম বাড়ানো সঠিক না। এতে আপনার ব্যবসার বারোটা বেজে যাবে।
  • ৫। বর্তমান সময়ে অনেকেই আপনার কাছে বাকি নিতে আসবে।  সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে বাকি দেবেন।  তবে আপনি আমার থেকে পরামর্শ চাইলে আমি আপনাকে বলবো বাকি দেওয়া বন্ধ করুন। কারণ বর্তমানে চিটিং বাটপার ভরে গেছে। আপনার থেকে নিয়ে আর কখনো টাকা দেবে না। 
  • ৬।  ব্যবসা শুরু করার সময় আপনাকে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে। আপনাকে মিতব্যায়ী হতে হবে। অর্থাৎ আপনি যে পরিমাণ লাভ করেছেন তার থেকে কিছু অংশ ব্যবহার করতে পারেন আর বাকি অংশ ব্যবসার কাজে রেখে দিতে পারেন। ব্যবসার মূলধন শেষ যাতে না হয় এর জন্য যা যা করণীয় সেটি বজায় রাখুন।
  • ৭। ব্যবসার প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে দুই ধরনের মার্কেটিং অবলম্বন করতে হবে তা হল ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ট্রাডিশনাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ট্রাডিশনাল মার্কেটিং সম্পর্কে  জানার চেষ্টা করুন।
  • ৮। আপনার ব্যবসার স্থান সঠিক ভাবে নির্ধারণ করুন। অহেতুক স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না করানোই ভালো। যে স্থানে আপনার ব্যবসাটি সাফল্য অর্জন করতে পারে সেই স্থানটি নির্ধারণ করার দায়িত্ব আপনার।
  • ৯।  ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই দেশীয় কিছু নিয়মকানুন রয়েছে সে সকল বিষয় জেনে নিন। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বৈধ নাকি অবৈধ তা যাচাই করুন।আপনার ব্যবসা রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতির কারণ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

পরিশেষে বলতে চাই, ব্যবসা এত সহজ বিষয় নয়। যতটা সহজ ভাবে বুঝিয়েছি আসলে ব্যবসা ততটা কিন্তু সহজ নয়। ব্যবসায় নেমে দেখুন তারপর বুঝতে পারবেন ব্যবসার মজা কতটুকু। আসলে বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা যায় কিন্তু যে ব্যবসা করে সে বোঝে ব্যবসার মূল্য কতটুকু।

Post a Comment

Previous Post Next Post